কলিযুগ শেষ হচ্ছে, মরুভূমিতে বন্যা হচ্ছে আর শৈলভূমিতে দাবদাহ, আবার একটা মহাযুদ্ধ আগতপ্রায়। তাই বিশ্বজুড়ে মহাভারতকালের সমস্ত চরিত্ররাই এখন নতুন শরীরে আবারো বর্তমান এবং প্রারব্ধ অনুযায়ী পাণ্ডব ও কৌরব দুপক্ষই এখন আবার ধীরে ধীরে নিজেদের জোটসঙ্গীসংখ্যা বাড়িয়ে বাড়িয়ে নির্ণায়ক মহারণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
যেহেতু এই মহাযুদ্ধটি আসলে ধর্মযুদ্ধ এবং এর মূল কান্ডারি স্বয়ং শ্রীভগবান নিজে, এটি শুরু হওয়ার আগেই অধর্মিকদের মধ্যে নানারকম ছোটখাটো রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে, যার মাত্রা একসময় এমন বেড়ে যাবে যে সেখান থেকেই কোনো এক স্ফুলিঙ্গ এবার মহাভারতে বর্ণিত বিনাশকালের মতো প্রলয়ের সূচনা করবে এবং সেই সাথে সাথে দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন শান্তিময় যুগেরও সূচনা হয়ে যাবে।
নিশ্চিত থাকুন যে যাদের মধ্যে এতটুকুও আসুরিক প্রবৃত্তি আছে, তারা কেউ রেহাই পাবে না, সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। পূজাপদ্ধতি নির্বিশেষে সনাতন ধর্মের পথই একমাত্র ঈশ্বর নির্দিষ্ট পথ এবং ভৌতিক অগ্রগতি যাই হোক না কেন, জীবনচক্রে ধর্মের জয় নিশ্চিত করতেই যুগে যুগে অধর্মের বিনাশ প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে।
বিশ্বজুড়ে এখন পাপের ঘড়া এতটাই পূর্ণ হয়ে গেছে যে তা খালি না করতে পারলে ধর্মপ্রাণ মানুষের জীবনরক্ষা করাই কঠিন। এই দুর্বিষহ অবস্থা থেকে তাঁদের মুক্তি দিতে হলে অধর্মের নাশ করা ছাড়া শ্রীভগবানের কাছে আর কোনো বিকল্প নেই। আগামী ২০২৫ থেকে নিয়ে দশ বছর ধরে যে শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া চলবে, তার শেষে ধর্মের জয় এবং অধর্মের পরাজয় নিশ্চিত।
এরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক মানচিত্রই কেবল বদলে যাবেনা, পুণ্যভূমি ঋদ্ধভূমি বেদভূমি ভারতবর্ষের ঈশ্বরর্নির্দিষ্ট অন্তর্নিহিত আধ্যাত্মশক্তির প্রভাব এমনভাবে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়বে যে ভৌগোলিক ও প্রশাসনিক সীমা অতিক্রম করে সারা বিশ্বজুড়ে ভারতবর্ষ এক নতুন ঐশীপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠবে, যার কথা স্বামী বিবেকানন্দ এবং ঋষি অরবিন্দ বলে গেছেন।
নিজেদের অন্তরাত্মার ডাককে দীর্ঘদিন অবহেলা করার ফলে ভারতের মধ্যে যে সমস্ত অধার্মিক শক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে ধর্মযুদ্ধ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে এবং এই দশকের মধ্যেই তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তবে অন্যান্য দেশের মতন ভারতের অভ্যন্তরীন যুদ্ধটি রক্তক্ষয়ী হবে না, সেটি হবে মূল্যবোধাশ্রয়ী, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক। এই মহাভারতে ভারতের ভূমিকা হলো সঞ্জয়ের মতন - একজন দৈব আশীর্বাদপ্রাপ্ত দ্রষ্টার। সেই দ্রষ্টা, যিনি কেবল দূরদৃষ্টিই অর্জন করেননি, অর্জুনের সাথে সাথে যাঁর বিশ্বরূপদর্শনও হয়েছিল।
No comments:
Post a Comment