সংস্কৃতে '√ভা' ধাতু দীপ্তিসূচক। তাই যিনি দীপ্তি দান করেন অর্থাৎ সূর্যদেব, তাঁর অপর নাম ভানু বা ভানুমান বা ভাস্কর বা ভাস্বান। আবার সংস্কৃতে 'ত' (ক্ত) হলো কৃৎ প্রত্যয়। এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে শব্দ তৈরি হওয়ার সময় ক্রিয়ামূলের বানানের পরিবর্তন ঘটায়। ক্রিয়ামূলের শেষ বর্ণ 'ন' বা 'ম' থাকলে, তা 'ত' বর্ণে পরিণত হয়। যেমন ম>ত - √রম্ (আনন্দ লাভ) >রত। তাহলে ভারতের অর্থ কি দাঁড়ায়? যে দেশ আলোর ভুবনে নিজের অস্তিত্বের আনন্দ খোঁজে - যার ঋষি প্রার্থনা করেন 'তমসো মা জ্যোতির্গময়', আমায় অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে চলো। এই প্রাচীন ভূমিকে ইন্ডিয়া বলে গালাগাল দিয়ে কি লাভ? আমি সত্যি সত্যিই চাই কেউ না কেউ উদ্যোগী হয়ে সংবিধান থেকে India that is Bharat নামক নষ্টামিটিকে দূর করে দিন আর Preamble থেকেও secular আর socialist শব্দগুলিকে বাদ দিয়ে আবার শুরুতে যেমন ছিল তেমনটি করে দিন। আমি চাই যে আমার জীবদ্দশাতেই ভারতের মাটি থেকে ইন্ডিয়ার সমস্ত চিহ্ন চিরতরে মুছে যাক। ভারত ইন্ডিয়া নয়। কোনোদিন ছিল না, এখনো নেই, ভবিষ্যতেও কোনোদিন থাকবে না। ভোগবাদীদের দেওয়া একটি নাম কখনো একটি আদ্যন্ত আধ্যাত্মিক পরিমণ্ডলযুক্ত পুণ্যভূমির অন্তরাত্মার প্রকাশক হতে পারে না। এ যেন পদ্মলোচনের নাম কানাছেলে। যেদিন আমাদের মানসিকতা থেকেও ইন্ডিয়া সরে যাবে সেদিন ভারত সত্যিকারের দীপ্তঃমান হয়ে ক্ষতবিক্ষত পৃথিবীকে নতুন করে আঁধারের পারে আশার আলো দেখাবে, বলবে:
শৃন্বন্তু বিশ্বে অমৃতস্য পুত্রা
আ যে ধামানি দিব্যানি তস্থূ॥
(শ্বেতাশ্বতর উপনিষৎ, ২ . ৫)
বেদাহমেতং পুরুষং মহান্তম্
আদিত্যবর্ণং তমসঃ পরস্তাৎ।
তমেব বিদিত্বাতিমৃত্যুমেতি
নান্যঃ পন্থা বিদ্যতে অয়নায়॥
(শ্বেতাশ্বতর উপনিষৎ, ৩ . ৮)
রবীন্দ্রনাথের ভাষায়,
শোনো বিশ্বজন,
শোনো অমৃতের পুত্র যত দেবগণ
দিব্যধামবাসী, আমি জেনেছি তাঁহারে
মহান্ত পুরুষ যিনি আঁধারের পারে
জ্যোতির্ময়। তাঁরে জেনে তাঁর পানে চাহি
মৃত্যুরে লঙ্ঘিতে পারো, অন্য পথ নাহি।
No comments:
Post a Comment