Sunday, April 2, 2023

নতুন সংসদভবন

বিদিশার বিশাল বীজমন্ডল মন্দির, যাকে বিজয়া মন্দিরও বলা হয়, ঔরঙ্গজেব তোপ দেগে ধ্বংস করেছিল ১৬৮২তে আর সেই ধ্বংসস্তুপের ওপর তৈরি করেছিল আলমগিরি মসজিদ। 

১১ শতকে সম্রাট নরবর্মন দেবী চার্চিকা বা বিজয়ারুপিনী মহিষাসুর মর্দিনীকে প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে এই মন্দিরটির নির্মাণ শুরু করেছিলেন কিন্তু বোধহয় কাজ শেষ করে উঠতে পারেননি।

এখন এই ধ্বংসাবশেষ ASI দ্বারা সংরক্ষিত। গোমুখ আকৃতির এই বিশালাকায় মন্দিরটির আদলেই গড়ে উঠছে আমাদের নতুন সংসদ ভবন, যা ভবিষ্যতের সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী ভারতের আত্মবিশ্বাস এবং আত্মপরিচয়ের প্রতীক হয়ে উঠতে চলেছে। 

গোলামির মানসিকতা চিরতরে ছিন্ন করে প্রাচীনতম গণতন্ত্রের পারম্পরিক জীবনবোধ এবং আধুনিক জীবনযাত্রার এক অদ্ভুত মেলবন্ধন আমাদের এই নতুন বীজমণ্ডলীয় গোমুখী সংসদভবন। 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সেবাকালের যে দুর্দান্ত architectural footprint রেখে যাচ্ছেন, আমাদের সভ্যতার দীর্ঘ ইতিহাসে তা আমরা বারেবারে হতে দেখেছি। সেই অজন্তা ইলোরা থেকে নিয়ে চোলারাজারা হয়ে শিবাজী মহারাজ পর্য্যন্ত সবাই contemporary ভারতীয় শিল্পশৈলীর ছাপ রেখে গেছেন তাঁদের কীর্তিতে। 

আক্রমণকারী সাম্রাজ্যবাদীরাও তাদের মতো করে ছাপ রেখে গেছে এদেশীয় স্থাপত্যে। তারপর কয়েকদশক ধরে socialism এর চক্করে পরে ভারতীয়ত্ববিহীন nondescrpit কতগুলো দৃষ্টিকটু বিল্ডিং খাড়া করা হয়েছিল, অবশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে সে ধারার অবসান হয়েছে। 

আসলে অতীতের প্রতি যদি শ্রদ্ধা না থাকে তাহলে বর্তমানকে নির্মাণ করা যায়না। এই নতুন সংসদ ভবন কেবলমাত্র ইতিহাস সচেতনতার ফসলই নয়, অতীতের ভুল শোধরানোর একটি উত্তম প্রয়াসও বটে, যেমনটা কাশী বিশ্বনাথ করিডর বা রাম মন্দির করিডোর নির্মাণের ক্ষেত্রেও হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী নির্মিয়মান সংসদ পরিদর্শনে গেছেন, তার কিছু ছবি দেখলাম এবং মধুবনি চিত্রকলা ইত্যাদির ব্যবহার দেখে মুগ্ধ হলাম। ভাগ্যিস এই ভদ্রলোক ক্ষমতায় এসেছিলেন নইলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন বিরাট থামওলা রাজকীয় সিনেট হল ভেঙে তার জায়গায় একটি দৃষ্টিকটু multistoried বিল্ডিং উঠতে দেখতেই তো আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম।

No comments:

Post a Comment