If you are emotionally attached to your tribe, religion, or political leaning to the point that truth and justice become secondary considerations, your education and exposure are useless. If you cannot reason beyond petty sentiments, you are a liability.
- Chuba Okadigbo
১.
খবরে পড়লাম কর্ণাটকে যে দল জিতেছে তারা নাকি পৈশাচিক আনন্দে বিপক্ষদলের এক কর্মীকে তাঁর বাড়ির সামনেই পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এর আরো মারাত্মক রূপ তো এই পশ্চিমবঙ্গেই আমরা একাধিকবার দেখেছি, ভোটের নাম শুনলেই এখন বড্ড ভয় হয় নাজানি কতগুলি তাজা প্রাণ আবার বেঘোরে চলে যাবে! সর্বত্রই দেখতে পাচ্ছি এই জঘন্য সর্বগ্রাসী রাজনীতি যেন গোটা সমাজের গলায় শেকল পরিয়ে পৈশাচিক হাসি হাসতে হাসতে নরকের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
যাকেই জিজ্ঞেস করবেন সেই যেন হয় এ-দলের নয় ও-দলের দাদন পাওয়া bonded labour, অথবা এই গোষ্ঠীর বা ওই গোষ্ঠীর ক্রীতদাস, প্রায় কেউই দল বা গোষ্ঠীর ওপরে উঠে কেবলমাত্র দেশের প্রতি সমর্পিতপ্রাণ নন! সনাতন ভারতের উত্থান কিন্তু রাজনীতির হাত ধরে হয়নি - দৈনন্দিন জীবনকে ধর্মপথে চালিত করে আমরা এক মহান সভ্যতা হিসেবে উঠে এসেছিলাম। ধর্ম সারা বিশ্বে ভারতেরই দান, পৃথিবীর অন্য কোনো ভাষায় ধর্মের কোনো প্রতিশব্দ নেই।
এখন আবার যদি বিশ্বমানচিত্রে ভারতকে নিজের পুরানো জায়গা ফিরে পেতে হয় তাহলে প্রথমেই সমাজকে প্রাত্যহিক জীবন থেকে এই অধার্মিক নিচ রাজনীতিকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দিতে হবে। সমাজসেবার হাতিয়ার, জনকল্যাণের অস্ত্র ইত্যাদি মিথ্যে কথাগুলোয় বিশ্বাস না করে প্রথমেই স্বীকার করে নিন যে রাজনীতি এখন শুধুমাত্র একটা remunarative পেশা, এবং অত্যন্ত সিরিয়াস cut throat একটা পেশা, ফলে আর পাঁচটা পেশার মতোই এখানেও সিরিয়াস পেশাদাররাই সমাদৃত হন।
আরে আপনার পাড়া প্রতিবেশী, আপনার আত্মীয় স্বজন, আপনার বন্ধু বান্ধবরা কি পেশাদার রাজনীতিবিদ নাকি আপনার আপনজন, আপনার নিজের সমাজ? আর আপনি নিজে কি পেশাদার রাজনীতিবিদ যে অজানা অচেনা কিছু চরম স্বার্থপর চরম আগ্রাসী চরম পরিহার্য প্রাণীর স্বার্থসিদ্ধির জন্য আপনজনদের সঙ্গে তর্কবিতর্ক মারকাট করে মরবেন? নিজের মেয়ের বিয়েতে ভিন্নমতধারী প্রতিবেশীকে বাদ দিয়ে অন্য এলাকার দলের লোকেদের ডাকছেন - আপনি কি পাগল? যেদিন মাঝরাতে বুকে ব্যাথা উঠবে সেই মুহূর্তে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কি প্রতিবেশীকে পাশে পাবেন না দলকে?
যদি জীবনে শান্তি পেতে চান প্রথমেই এই অধার্মিক পাকচক্র থেকে ছিটকে বেরোন আর যাঁর যে ধর্মাধিকারীদের ভালো লাগে তাঁদের কাছে গিয়ে ধর্ম আধারিত জীবনের পথনির্দেশ নিন অথবা আমাদের প্রাচীন দর্শন পড়ুন। জীবনে ধর্ম অর্থাৎ মর্য্যাদাজ্ঞান ও কর্তব্যবোধকে খুঁটি করে একজন যথার্থ সামাজিক প্রাণী হিসেবে নিজের দেশ, জাতি কুল এবং মানের খেয়াল রাখুন - দেখবেন আপনি ধর্মকে রক্ষা করলে ধর্মই আপনাকে রক্ষা করবে।
সমাজের প্রতি যদি সত্যি সত্যিই আপনার মধ্যে নিরহংকার সেবাভাব জন্মায় তাহলে ঈশ্বর ঠিকই তা অভিব্যক্তির রাস্তা প্রশস্ত করে দেবেন, আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। তবে এই করতে গিয়ে যদি ভুলক্রমেও রাজনীতির খপ্পরে পড়েন, হয় exploited হবেন, নয় heart burn হবে, নয় ব্যক্তিস্বার্থসর্বস্ব ক্ষমতালোভীদের ক্রীতদাস হয়ে থাকবেন এবং ধীরে ধীরে তাদেরই মতো হয়ে যাবেন, যার কোনোটাই বোধহয় কাম্য নয়। রাজনেতাদের নিজেদের মধ্যে কিন্তু ব্যক্তিগত শিষ্ঠাচারের অভাব নেই, কেবল পা-চাটাদের মধ্যেই যত বিভেদ। ভেবে দেখবেন।
২.
গতকাল আমি লিখেছিলাম যে নিজের মাথাটা উঁচু রাখুন, পেশাদার রাজনীতিবিদ না হলে খামোখা কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে মাথাটা বিকিয়ে দেবেন না। তারপর থেকে ইনবক্সে এত ম্যাসেজ এসেছে যে বলার কথা নয়। তাই মনে হলো individually সবাইকে উত্তর দিয়ে সময় নষ্ট না করে এখানেই আবার একবার লিখে দিই। আমি নিজে ভুল করেছিলাম, ঠেকে শিখেছি, তাই আপনাদের ওই রাস্তায় হাঁটতে বারণ করছি।
আমি কিন্তু একবারও বলিনি যে নিজেদের রাজনৈতিক সচেতনতা বিসর্জন দিন অথবা দেশের ব্যাপারে চোখ কান বন্ধ করে রাখুন। দেশ হলেন মা, মাকে পরম শ্রদ্ধায় এমন নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরে থাকুন যাতে তিনি সবসময় ভালো থাকেন, শান্তিতে থাকেন, আরামে থাকেন, আনন্দে থাকেন। দেশের বিরুদ্ধাচরণ দেখলে অবশ্যই গর্জে উঠুন, সারা সমাজকে একাট্টা করে প্রতিরোধ করুন।
সমাজ মানে আপনজন, তাতে বিভিন্ন মতাবলম্বী থাকতেই পারেন - আপনার বাড়িতে কি মতভেদ নেই? সবার সাথে সবার কি সবসময় মতের মিল হয়? আমি খালি এটুকুই বলছি যে সমাজের সাথে ওঠাবসার ক্ষেত্রে নিজের বুদ্ধি, নিজের বিবেক আর নিজের ধর্মবোধকে ব্যবহার করুন, কোনো দলের চশমা পরে সমাজকে দয়া করে দেখবেন না, নিজেকে দলদাস করে ফেলবেন না।
এর মানে এও নয় যে আপনার বিশেষ কোনো মত বা নেতার প্রতি preference থাকবে না, থাকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে কোনো অবস্থাতেই নিজের independent thinking কে compromised হতে দেওয়া চলবে না - যদি মনে হয় পছন্দের দল বা নেতা ভুল করছেন, খোলাখুলি criticise করুন। তাঁরা আপনার ভোটটা নেবেন কিন্তু critisism নেবেন না, এ হয় নাকি? সবসময় মনে রাখবেন আপনি একজন আম জনতা, কোনো পেশাদার রাজনীতিবিদ নন, ফলে কোনো দলীয় লাইন মেনে চলার, অন্ধের মতন দলীয় লাইন আওড়িয়ে সাদাকে কালো আর কালোকে সাদা বলার কোনো দায়বদ্ধতা আপনার নেই।
স্বাধীনভাবে বাঁচুন, স্বাধীনভাবে চিন্তা করুন আর সমাজকে নিজের সমাজ হিসেবেই দেখুন, বিভিন্ন fragmented competing entityর সমষ্টি হিসেবে নয়। আর একটা কথা। নিজের উত্তরাধিকার, তা সে পরিবার হোক, কুল হোক, পন্থ হোক, ধর্মবোধ হোক, সমাজচেতনা হোক, সভ্যতা হোক বা অন্য কোনো ঐতিহ্য, জানবেন সেটা একমাত্র আপনারই বাপের সম্পত্তি, অন্য কারো নয়। কোনো দল বা নেতা যদি সেই উত্তরাধিকারের একমাত্র রক্ষাকর্তা হিসেবে নিজেকে project করেন, জানবেন কেবলমাত্র ভোট পাওয়ার জন্য ঢং করছেন। আপনার নিজের বিশ্বাস নিজের অন্তরেই সবচেয়ে বেশি সুরক্ষিত, তার জন্য কোনো দরোয়ানের দরকারই নেই।
শাসক সবরকমভাবে নিরপেক্ষ হবে, উন্নয়নের facilitator হবে, অর্থনীতিকে strong footing-এ রাখবে, আইনের শাসন বলবৎ রাখবে, দেশকে সামরিকভাবে সুরক্ষিত রাখবে, বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি বাড়াবে, নতুন নতুন innovation আর entrepreneurship-কে encourage করবে, কৃষিকে বিষমুক্ত করবে এবং খাদ্যসুরক্ষা ensure করবে, স্বাস্থ্য শিক্ষা বাসস্থান ইত্যাদি basic needs পূরণ করবে - ব্যাস এটুকুই তার utility, তার বেশি কিছু নয় আর তার জন্য সে আপনার করের টাকায় মাইনে ও বিস্তর perks পায়। বাকি যা করার সমাজ করবে, আপনি আমি করবো। তাই সমাজকে জুড়ে রাখুন, নিজেদের জীবন থেকে দৈনন্দিন রাজনৈতিক কচকচানিকে একেবারেই বাদ দিয়ে দিন, দেখবেন ধর্মপথে চলতে শেখার সময়ও পাবেন, জীবনে শান্তিও পাবেন।