Wednesday, January 17, 2024

র‍্যালিতে রাম নেই

সনাতন ধর্ম বিশ্বাস নির্ভর নয়, চিন্তন, মনন এবং প্রত্যক্ষ অনুভূতি নির্ভর। হ্যাঁ, কারোর integrity-র ওপর যদি আমার অপার আস্থা থাকে, তাঁর প্রত্যক্ষ অনুভূতির কথা যদি যুক্তি দিয়ে নতুন করে independently বিচার করার কোনো প্রয়োজনই বোধ না হয়, তাঁর মুখের কথাকেই যদি আমি সত্য বলে বিশ্বাস করি, সেটা অন্য বিষয় যেমন শিশু সরল বিশ্বাসে তার মায়ের কথা মেনে নেয়। কিন্তু by and large ভারতীয় সংস্কৃতিতে blind faith-এর কোনো চলন নেই, প্রশ্ন করার, বাজিয়ে নেওয়ার, তর্ক করার এবং convinced না হলে না মেনে নেওয়ারও সম্পুর্ন অবকাশ আছে। 

ফলে এই ধরণের খোলা মনের চিন্তক এবং তার্কিক একটি সমাজের পক্ষে বিনা বিতর্কে কেবল বিশ্বাস নির্ভর কোনো মতাদর্শকে মেনে নেওয়া তার মূল প্রাচীন কাঠামোটারই পরিপন্থী। এইজন্যই ধর্ম আর পন্থ (faith) আলাদা। There can be a dialogue between faiths, there could even be an interfaith congress where, in the garb of finding commonality, everyone tries to establish how infaliable or brilliant his own faith is (always as a counter perspective to other faiths), but there can never be real harmony between faiths as faith is essentially blind. একজন অন্যজনের মতবাদ সহ্য করতে পারেনা। শ্রীরামকৃষ্ণদেব কেন 'যত মত তত পথ' বলেছিলেন, কেন 'যত ধর্ম' বলেননি, সেটা ভেবে দেখার বিষয় বৈকি।

এখানেই all faith rally নিরর্থক হয়ে যায় কারণ পন্থ নয়, সেই ধর্মবোধ যার আদিও নেই, অন্তও নেই, বিভিন্ন স্তরের, বিভিন্ন প্রান্তের, বিভিন্ন জাতির মানুষকে একমাত্র সেইই জীবনযাপনের দিশা দেখাতে পারে, সবাইকে মনুষ্যত্বের ছাতার তলায় একাট্টা করতে পারে কারণ তা হাজার হাজার বছর ধরে বহমান human values ভিত্তিক সভ্যতার উপলব্ধির ওপর দাঁড়িয়ে আছে যে। শ্রীরাম ধর্মের প্রতীক, পন্থের নয়। শ্রীরামকে নিয়ে গত ৭০০০ বছর ধরে যত কাটাছেঁড়া হয়েছে, তাঁর জীবনের বিভিন্ন অধ্যায় যেমন বালীবধ, সীতার অগ্নিপরীক্ষা, বনবাস এবং মা ধরিত্রীর বুকে ফিরে যাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর ভূমিকা নিয়ে যত তর্কবিতর্ক হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। এটা কিন্তু ভারতবর্ষ ধর্মবোধি বলেই সম্ভব হয়েছে। 

শ্রীরামকে একদিকে বিষ্ণুর অবতার বলে পূজা করা হচ্ছে আর অন্যদিকে তাঁকে নিয়ে তির্যক সমালোচনা চলছে, এটির মূলে একমাত্র পারম্পরিক righteousness, এতটা ছুট অক্ষরে অক্ষরে পন্থীয় নির্দেশ মেনে চলা blind faithful-রা তাঁদের এক-ঈশ্বর সম্পর্কে কল্পনাও করতে পারেন না। ফলে, আগামী ২২শে জানুয়ারি গোটা ভারতবর্ষ এবং সারা পৃথিবী জুড়ে ধর্মের পুনর্জাগরণের পূণ্যদিন, ওদিন মোটেও বিভিন্ন গোঁড়া পন্থাবলম্বীদের একত্রিত করে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার দিন নয়। অবশ্য এর একটা অন্যদিকও আছে। যদি অযোধ্যাধামে পুনর্নির্মিত শ্রীরামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিনে এই কার্যক্রমের আড়ে 'পন্থ যার যার, সনাতন ধর্ম সবার' বার্তা দেওয়াই উদ্দেশ্য হয়, তাহলে বিষয়টি অবশ্য অন্য মাত্রা পায়। আমি তো রাজনীতি বুঝি না, ফলে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল ঠিক ধরতে পারছি না।

No comments:

Post a Comment