Saturday, January 20, 2024

শ্রীরামমন্দির

আমরা ভারতীয়রা এবং বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মানুষ যে মন্দিরটির জন্য নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী কিছু না কিছু অর্থ বা শ্রমদান করেছি, শ্রীরামচন্দ্র ভগবানের সেই মন্দির আজ সগর্বে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। যা প্রয়োজন ছিল তার দশগুন বেশি অর্থদান দিয়েছি আমরা, ফলে মন্দির প্রাঙ্গণ দশগুন বেশি ভব্য হয়ে উঠছে, যে দরজা কাঠের হওয়ার কথা ছিল, তা সোনার হয়েছে। এই মন্দির আমাদের সকলের একান্ত ইচ্ছা, আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং দীর্ঘ সংঘর্ষের প্রতীক - এক কথায় বলতে গেলে শ্রীরামজন্মভূমি মহাতীর্থক্ষেত্র সামগ্রিকভাবে আধুনিক ভারতীয়দের ধর্মাশ্রিত জীবনযাপনের ইচ্ছার প্রতিভূ, যে ধর্মবোধ হাজার হাজার বছরের আঘাত সহ্য করেও আমাদের সভ্যতা এবং সংস্কৃতিকে এখনো জীবন্ত এবং চলমান রাখতে সাহায্য করেছে। 

আমরা অন্যদের চেয়ে আলাদা, তাই আজ পর্যন্ত কেউ গায়ের জোরে বা লোভ দেখিয়ে আমাদের গিলে ফেলতে পারেনি - এই মন্দির সেই অন্যনতার জ্বলন্ত নিদর্শন। আমরা সবাই মিলে চেয়েছি, তাই রামমন্দির সম্ভব হয়েছে। এ কেবল আমাদের আস্থার বিষয় নয়, এ আমাদের জাতীয় অস্মিতার বিষয়, আমাদের মূল সংস্কারকে সংরক্ষিত রাখার বিষয়, জাতি হিসেবে আমাদের সম্মিলিত চেতনার বিষয়। আগামীকাল যখন শ্রীশ্রীরামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে, তখন আমরা প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ ভারতবাসী যজমান হিসেবে ওখানেই উপস্থিত থাকবো - হয়তো সশরীরে নয়, আমাদের প্রতিনিধি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে। এবং প্রধানমন্ত্রী সেটা জানেন বলেই ১১দিন ধরে যজমানের কৃতকর্তব্য হিসেবে এত যম-নিয়ম-দর্শন পালন করছেন। 

যখনই সামাজিক মাধ্যমে ফুটে ওঠা শ্রীরামমন্দিরের দিব্য সাজসজ্জার ছবি দেখছি, গর্বে আনন্দে শ্রদ্ধায় বিশ্বাসে আমার মাথা নত হয়ে যাচ্ছে। আহা, এ কি মনোরম রূপ তুমি গ্রহণ করেছ প্রভু, দেখে দেখে যে আর আশ মেটে না ! ছোটবেলা থেকে শুনতাম চোখের দেখা সার্থক হলো কিন্তু তার সত্যিকারের মানে কখনো বুঝিনি, আজ বুঝলাম। যা দেখছি তা আমার স্বপ্নের প্রতিরূপ, আমার অভিলাষার প্রতিরূপ, আমার অস্তিত্বের প্রতিরূপ, আমার বোধের প্রতিরূপ, আমার ভারতীয়ত্বের প্রতিরূপ। কেবল এই তীর্থদর্শনটুকুর স্বাদ পাওয়ার জন্যই বারেবারে যেন এ দেশের মাটিতেই আমার জন্ম হয়, কারণ এর মাধ্যমেই একদিন আমি শুদ্ধ মুক্ত চৈতন্য হবো।

No comments:

Post a Comment