ইউটিউবে আজ অযোধ্যায় রামপথ, ধর্মপথ ইত্যাদির শোভা দেখতে দেখতে আমার শ্রদ্ধেয় লালকৃষ্ণ আদবানিজি, শ্রদ্ধেয় মুরলি মনোহর যোশীজি, স্বর্গীয় প্রমোদ মহাজনজি, মা স্বাদ্ধী ঋতম্ভরাজি, মা উমা ভারতীজি, আচার্য্য গিরিরাজ কিশোরজি, শ্রদ্ধেয় অশোক সিংহলজি, শ্রদ্ধেয় বিনয় কাটিয়ারজি, শ্রদ্ধেয় কল্যাণ সিংজি, শ্রদ্ধেয় প্রবীণ তোগাড়িয়াজি, শ্রদ্ধেয় বিষ্ণু হরি ডালমিয়াজি, এমন আরো কত মহান বিভূতিদের কথা মনে পড়ছে, যাঁরা হিন্দু সমাজকে প্রেরণা না যোগালে আজ এই পূণ্যদিন হয়তো আমরা দেখতেই পেতাম না।
৫০০ বছর ধরে অজস্র সংঘর্ষের কথা যদি ছেড়েও দিই, আমাদের জীবদ্দশাতেই কি কঠিন যে ছিল এই লড়াই, যাঁরা মুলায়ম সিংয়ের আদেশে রামভক্তদের গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়তে দেখেছেন বা যাঁরা দিগ্বিজয় সিংয়ের আদেশে রাত আড়াইটার সময় মা ঋতম্ভরাজির গ্রেফতারি এবং তারপর চারদিন ধরে আদালতে পেশ না করে অবৈধভাবে জেলে নির্যাতন করার কথা শুনেছেন অথবা যাঁরা লালু প্রসাদ যাদবের আদেশে পাটনায় শ্রী লালকৃষ্ণ আদবানিজিকে গ্রেফতার করা দেখেছেন, যাঁরা ১৯৯২ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরং দলকে ব্যান করে দেওয়া দেখেছেন বা রাজ্যে রাজ্যে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জনপ্রিয় নির্বাচিত সরকারদের বরখাস্ত করে দেওয়া দেখেছেন, তাঁরা জানেন।
কিছু করেই কেউ কিছু আটকাতে পারেনি, রামমন্দির আজ এক reality, এমনি এমনিই হলো? প্রভু চেয়েছিলেন তাই ধ্বংস হয়েছিল, আজ প্রভু চেয়েছেন, তাই পুনর্নির্মিত হচ্ছে। আর কোনো মহৎ কাজই বলিদান ছাড়া সম্ভব হয় না, যেমন প্রোপাগান্ডায় বিপ্লবীদের আত্মবলিদান আর সুভাষ বসুর সর্বোচ্চ sacrificeকে লুকিয়ে দিয়ে দেশভাগ করা যেতে পারে কিন্তু কোনোদিন স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনা যায় না। কিছু ধূর্ত দেখছি রামজন্মভূমি ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক শ্রী চম্পত রাইজিকে নিয়ে প্রচুর জলঘোলা করছেন। ওরা জানেন কি যে কেমেস্ট্রির অধ্যাপক শ্রী রাইকে এমার্জেন্সির সময় ইন্দিরা গান্ধীর সরকার ১৮মাস জেলবন্ধি করে রেখেছিলেন এবং উনি না থাকলে ওই অবৈধ ধাঁচাটা হয়তো আজও অক্ষত থাকতো? যত্তসব!
দুটো কথা:
১.
ধারণাদ্ধর্মমিত্যাহু ধর্মো ধারয়তে প্রজাঃ।
যৎস্যাদ্ধারণ সংযুক্তং স ধর্ম ইতি নিশ্চয়ঃ।।
(মহাভারত : কর্ণপর্ব, ৬৯. ৫৮)
সমাজকে, জনসাধারণকে যা ধারণ করে রাখে, তাই ধর্ম। তাই যাতে জনসাধারণের, সমাজের সমৃদ্ধি এবং কল্যাণ হয়, তার সাথে যুক্ত হওয়াই ধর্ম, এ কথা নিশ্চিতরূপে জেনো।
২.
ন বিভেতি রণাদ্ যো বৈ সংগ্রামেঽপ্যপরাঙ্মুখঃ।
ধর্মযুদ্ধে মৃতো বাপি তেন লোকত্রয়ং জিতম্।। (মহানির্বানতন্ত্র : ৮.৬৭)
যিনি যুদ্ধে ভয় পান না, যিনি সংগ্রামে অপরাঙ্মুখ বা যিনি ধর্মযুদ্ধে মৃত হন, তিনি ত্রিভুবন জয় করেন। যদি স্বদেশের বা স্বধর্মের জন্য যুদ্ধ করিয়া গৃহস্থের মৃত্যু হয় - যোগিগণ ধ্যানের দ্বারা যে পদ লাভ করেন, তিনিও সেই পদ লাভ করিয়া থাকেন। (অনুবাদ: স্বামী বিবেকানন্দ)
আর রবীন্দ্রনাথের ভাষায়,
মুক্ত করো ভয়, নিজের’পরে করিতে ভর না রেখো সংশয়।
ধর্ম যবে শঙ্খরবে করিবে আহ্বান
নীরব হয়ে নম্র হয়ে পণ করিয়ো প্রাণ।
মুক্ত করো ভয়, দুরূহ কাজে নিজেরি দিয়ো কঠিন পরিচয়॥
No comments:
Post a Comment