আর কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের পরিবারের কনিষ্ঠতম সন্তানটিও পৈতৃক বাড়ি ছেড়ে অন্য শহরে চলে যাবে, কারণ সেই আদি অকৃত্তিম lack of career growth opportunities in West Bengal. আমাকেও প্রায় চার দশক আগে ঘরবাড়ি পরিবার পরিজন ছেড়ে এই একই কাজ করতে হয়েছিল, পার্থক্য কেবল তখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন 'সর্বহারার নেতা' জ্যোতিবাবু। সেই যে কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কবে আমাদের অনেকেরই মনের কথা বলে গিয়েছিলেন না:
রাজা আসে যায় রাজা বদলায়
নীল জামা গায় লাল জামা গায়
এই রাজা আসে ওই রাজা যায়
জামা কাপড়ের রং বদলায়….
দিন বদলায় না!
যাইহোক, এসব তো আমরা মেনেই নিয়েছি - brain drain আমাদের পোড়া রাজ্যের ভবিতব্য। ও প্রথমে ট্রেনের টিকিট খুঁজে দেখলো কারণ সঙ্গে কিছু মালপত্তর যাবে। ট্রেনের টিকিট যথারীতি ওয়েটলিস্টেড, কনফার্মড হবে কি না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বাধ্য হয়ে প্লেন - এবং সেখানেই আসল চমক। প্লেনের টিকিটের দাম ট্রেনের ফার্স্ট ক্লাসের তুলনায় প্রায় ৭০০ টাকা কম এবং বলাই বাহুল্য, মাত্র কয়েকঘন্টায় পৌঁছে দেবে। এমতবস্থায় কিছু মাল সার্ফেস কুরিয়ার দিয়ে পাঠিয়ে দিলেও আখেরে লাভজনক।
এই যে কথায় কথায় ছাগলের তৃতীয় সন্তানগুলো লাফিয়ে মরে না যে সরকার দেশ বেচে দিলো, আদানি দেশ বেচে দিলো, আম্বানি দেশ বেচে দিলো - তাদের জ্ঞাতার্থে জানাই যে আজকের এই সাশ্রয়ী এয়ারলাইন্সটিকেই কিছুদিন আগেই টাটাকে বেচে দেওয়া হয়েছিল এবং যে internet ব্যবহার করে সেই টিকিটটা বুকিং করা হলো সেটাও আম্বানিদেরই কোম্পানির, যার data charges are lowest in the world. সত্যিটা হজম হবে না, তাই না?
আমি মাঝেমাঝে ভাবি যে এই দামড়া kidগুলো এমনই দুর্ভাগা যে এদের চোখের সামনেই তো দেশটা হুড়হুড় করে বদলে যাচ্ছে, রোজ রোজ নতুন নতুন opportunities, নতুন নতুন growth options খুলে যাচ্ছে, optics and living experience-ও বদলে যাচ্ছে - এরা সবকিছুই গোলগোল চোখ করে দেখছে কিন্তু কিছুতেই উন্নতিটা উপভোগ করতে পারছে না, celebrate করতে পারছে না! এদিক ওদিকের কিছু খুচরো dynast ছেড়ে দিলে, এগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই urban নকশাল আর armchair বিপ্লবী, তার মধ্যেও অধিকাংশই আবার মাত্র এক জেনারেশন আগে পেছনে লাথি খেয়ে পূর্ববঙ্গ থেকে বিতাড়িত হয়ে এপারে আসা হিন্দু বাঙালি, যারা আবার নিজেদের হিন্দু identity flaunt করতে ভীষণ কুন্ঠাবোধ করে! আমি সত্যিই এই অদ্ভুত জীবগুলিকে বুঝিনা। এককালে রাগ হতো, এখন এদের প্রতি করুণা হয়।
আরে আমার দেশ উন্নতি করছে, রোজ নতুন নতুন ঝাঁ চকচকে রাস্তা তৈরি হচ্ছে, নতুন নতুন জায়গায় রেল পৌঁছচ্ছে, নতুন নতুন এয়ারপোর্ট তৈরি হচ্ছে, deep sea port তৈরি হচ্ছে, মেট্রোরেল তৈরি হচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলব্রিজ, সবচেয়ে বড় টানেল, indigenous যুদ্ধবিমান, কামান, indigenous হেলিকপ্টার, indigenous aircraft carrier তৈরি হচ্ছে, দ্রুতহারে poverty কমছে, পাসপোর্টের কদর বাড়ছে, কত কিই না হচ্ছে, আমরা খুশি হবো না, celebrate করবো না? নাকি ব্রিটেনের মতো নিজেদের দেশের বিরোধিতা নিজেরাই করলে ভালো হয় - দেশ recessionএ ভুগছে আর বামপন্থী লেবার পার্টি পাঁচ লক্ষ workerকে হরতাল করতে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে যাতে বাকিটাও রসাতলে যায়!
উঁহু, কিছু বলা যাবে না নইলে বাবুদের গোঁসা হবে কারণ এটা যে ওদেরই দেশ, ওদের নিজেদের দেশ, সেই বোধটাই যে ওদের নেই। ওদের Holy-land চিনে এভার্গ্র্যান্ডে হয়েছে, সুতরাং এখানেও হতে হবে - চলো, বাইরের লোক বাদ দাও, আমরাই জিন পিং সেজে সবাই মিলে একজনের পেছনে লেগে যাই আর একটা first generation ভারতীয় বহুজাতিক সংস্থার 'রাম নাম সত্য হ্যায়' করে দিই! এরা এমন বিরুদ্ধপ্রচার করতে শুরু করেছে যে FPO fully subscribed হয়ে যাওয়ার পরও আদানিরা সব ক্যান্সেল করে বিশ হাজার কোটি টাকা investorদের ফেরত দিয়ে দেবেন বলে ঠিক করেছেন। এর বেশিরভাগই কিন্তু সৌদিদের, FII আর HNIদের টাকা ছিল, দেশের কাজে লাগতো। এই অপগন্ডগুলো কি কোনো mass মানসিক অবসাদের শিকার? ঠিক জানি না।
আমি এটাও বুঝি না যে যেখানে সত্যি সত্যি দুঃখ পাওয়ার কথা, সেখানে এই দুঃখবিলাসিরা হটাৎ এত নৈবর্তিক হয়ে যায় কেন? আমাদের এই পোড়া শহরে সেই কোন মান্ধাতার আমলে প্রতিভা পাটিল রাষ্ট্রপতি থাকার সময় জোকা-এস্প্ল্যানেড মেট্রোর শিলা পোঁতা হয়েছিল, বর্তমান রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার কারণে জমিজটে আটকে সেটি খোঁড়াতে খোঁড়াতে কোনোমতে সবেমাত্র অজন্তা অবধি এসে পৌঁছিয়েছে, তাও শুধু showpiece, এস্প্ল্যানেড এখনো বহুদূর। কই এর সমালোচনার ব্যাপারে এদের কোনো উৎসাহ দেখিনা তো, কেন?
কই, জোর জবরদস্তি ভারতীয় রেলকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর route alignment বদলাতে বাধ্য করে যখন উত্তর কলকাতার aquifer ধ্বংস করে বাড়ি ধসিয়ে দেওয়া হয়, তখন আসল অপরাধীদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও তো এদের বলতে শুনি না, কেন? যেখানে উত্তরপ্রদেশে হাজার হাজার কিলোমিটার জুড়ে আট-লেন আর বারো-লেনের অতগুলো গ্রিনফিল্ড ন্যাশনাল হাইওয়ে তৈরি হচ্ছে সেখানে আমাদের রাজ্যে বাংলাদেশের সাথে সংযোগকারী সামান্য একটা existing highwayকে চওড়া করতে গিয়েই কেন্দ্রীয় সরকার হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন, কই সে ব্যাপারে তো এদের নো ট্যাঁফুঁ, কেন রে ভাই?
গণতন্ত্রে সকলেরই বাকস্বাধীনতা আছে, ফলে এদের দুঃখ দুঃখ ভাব সহ্য করতেই হয়। আহা রে, কত মনকষ্ট বাবুসোনাদের! যে দেশের অপগন্ড জনতা বারবার একটা হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকারকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় নিয়ে আসতে পারে, সেই দেশের মূর্খ, দেহাতি, regressive, গোভক্ত, গঙ্গাসাগরের গায়ে বোঁটকা গন্ধওলা ধর্মান্ধ হিন্দুগুলোর সাথে কি করে যে কোনো শিক্ষিত, মার্জিত, গুয়েভারার ভক্ত progressive ভদ্রলোক থাকতে পারে, এরা বুঝে উঠতেই পারছে না! পঁচাত্তর বছর ধরে দেশ নাকি বিক্রি হয়েই যাচ্ছে, প্রতিবছর একই রাবিশ শুনে শুনে কান পচে গেল - কিন্তু দেশ তো যেমন ছিল তেমনই আছে দেখি। আমেরিকা নাকি মোদিকে কিনে নিয়েছে অথচ বাইডেনকে মুখের ওপর না বলে দিয়ে তার চরম শত্রু রাশিয়া থেকে আমাদের তেল কেনা চলছে তো চলছেই - কি কিউট না?
খালি মুখ ব্যাজার করে গুচ্ছের criticism, কেবল দুনিয়াভরের conspiracy theory আর অদ্ভুত অদ্ভুত victim card খেলা - কেন যে এতটা negative thinkingএর শিকার এরা, কিসের এত গোঁসা আর আক্রোশ, কে জানে বাপু। যাকগে, মরুক গে যাকগে যাক, এদের নিয়ে বেশি না ভাবাই ভালো। আমার দেশ চোখের সামনে ক্রমশ সমৃদ্ধ হয়ে উঠছে, শক্তিশালী হয়ে উঠছে, আমি দেখবো আর আনন্দে ধেই ধেই করে নাচবো - বেশ করবো। শকুনের অভিশাপে গরু মরে না, আগেও মরেনি, ভবিষ্যতেও মরবে না। ২০২৪এ মোদিজীর সরকার আবার জিতবেন, আরো বেশি মার্জিনে জিতবেন, এরা চাইলেও জিতবেন, না চাইলেও জিতবেন - এটাই আসল কথা। কারণ that is the mood of the Nation. Always Positive.
No comments:
Post a Comment