আমি অযথা বিতর্কের মধ্যে ঢুকতে চাইনা কিন্তু কেউ যখন কিছুই না জেনে জ্ঞান দিতে আসে, তখন সত্যিটা তুলে ধরা দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। বেশিরভাগ সরকারি বাবুরাই এঁড়ে তর্ক করেন, বিশেষত বামমনষ্ক আর্মচেয়ার বিপ্লবী হলে তো কথাই নেই। এঁরা এত baggageধারী এবং opinionated হন না, মাঝেমাঝে মনে হয় আমাদের ট্যাক্সের পয়সা নষ্ট করে এঁদের মধ্যে এঁড়েগুলোর পেছনে মাইনে না উড়িয়ে সরকার যদি সিঙ্গাপুরের মতন কেবল open-minded professionalদেরই সরকারি চাকরিতে বহাল করতেন, রাজ্যটা বোধহয় অনেক দ্রুতগতিতে এগোতো। আমি চিরকালই elite civil service এর ঘোর বিরোধী এবং আমি মনে করি কেবল মুখস্ত করার ক্ষমতা থাকলেই কেউ বিরাট বুদ্ধিমান হয়ে যান না।
যাইহোক, আমি লিখেছিলাম যে জিন্না আর গান্ধী একই পদ্ধতিতে ব্যারিস্টার হয়েছিলেন, তাতে এমনই এক বিপ্লবী বাবুর খুব গোঁসা হয়েছে - আমি নাকি জিন্না আর গান্ধীকে এক আসনে বসিয়ে মহা অন্যায় করে ফেলেছি। তারপরেই সেই বাঁধা গৎ - চাড্ডি, ভক্ত, অশিক্ষিত, uncultured ইত্যাদি ইত্যাদি। আচ্ছা কি মুস্কিল বলুন তো! জিন্না আর গান্ধী দুজনেই Victorian eraর ব্যারিস্টার, যখন ইউনিভার্সিটির ডিগ্রি থাক বা না থাক, Bar এর একটা এলেবেলে পরীক্ষায় পাস করে আর কোনো practicing ব্যারিস্টারের এপরেন্টিসশিপ করে তাঁর সুপারিশ জোগাড় করতে পারলেই কেল্লা ফতে হয়ে যেত - এবং এই পদ্ধতি follow করেই তো দুজনে ব্যারিস্টার হয়েছিলেন, তাতে আমার বা আপনার কি করার থাকতে পারে?
সে আমলে ব্যারিস্টার হতে গেলে দুরকম approach ছিল। প্রথমটা হলো আইনের serious ছাত্রদের জন্য - কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিন বছরের LL.B (Hons) কোর্স পাশ করে (যা পন্ডিত নেহেরু এবং সর্দার প্যাটেল করেছিলেন) তারপর কোনো একটি Inns of Court join করা। কিন্তু ইউনিভার্সিটিতে পড়ার পূর্বশর্ত ছিল কলেজের ডিগ্রি, যা কলেজ dropout গান্ধী আর school dropout জিন্না, কারোরই ছিল না। দ্বিতীয় উপায় ছিল সরাসরি চারটের মধ্যে যে কোনো একটি Inns of Court join করা, যার পর তাঁদের দুবছর P.C.LL নামক একটা course করতে হতো ও ওই Barএর এলেবেলে পরীক্ষাটা পাস করতে হতো এবং তারপর কোনো practicing ব্যারিস্টারের কাছে অন্তত একবছর apprenticeship এবং প্রচুর buttering করতে হতো।
আচ্ছা, এই Inns of Court কি লন্ডন বা অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়? না। যেমন আমাদের CA ইনস্টিটিউট আছে, তাদের পরীক্ষা পাস করলে যেমন আমরা তার মেম্বার হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করি, তেমনি Inner Temple, যা চারটি Inns of Court এর umbrella body, সেটা জজ এবং ব্যারিস্টারদের একটি association - ব্যারিস্টার হিসেবে approved হলে তার সদস্য হয়ে ব্যারিস্টার হিসেবে প্র্যাক্টিস করা যায় - একে বলে called to the bar। জিন্না এবং গান্ধী দুজনেই এই পন্থা অবলম্বন করে ব্যারিস্টার হয়েছিলেন।
আরো একটা কথা। গান্ধীর এক বিদেশি online biographer বলেছেন যে গান্ধী University College of London থেকে তিন বছরের ল ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন অথচ mkgandhi.org বলছে, 'Mahatma Gandhi sailed for England on 4th September, 1888 to study law and become a barrister. He kept terms at the Inner Temple and after nine months' intensive study he took all his subjects in one examination which he passed. He was called to the Bar on 10th June, 1891 and was enrolled in the High Court of England the next day. A day later, he sailed home. After his return to India he started practice as a lawyer at first in the High Court at Bombay and a little later in Rajkot but did not make much headway in the profession' - তাহলে কোনটা ঠিক?
তার থেকেও বড় কথা, Encyclopedia Britannica অনুযায়ী নিজের দেশে বম্বে উনিভার্সিটি থেকে কোনোমতে টেনেটুনে matriculation পাস করা গান্ধী ইংল্যান্ডে গিয়ে 'took his studies seriously and tried to brush up on his English and Latin by taking the University of London matriculation examination.' তাহলে, উনিভার্সিটি অফ লন্ডনের ডিগ্রির ব্যাপারটা পরিষ্কার হলো কি? ম্যাট্রিক - সেই যে সুকুমার রায়ের 'উনিশটিবার ম্যাট্রিকে সে ঘায়েল হয়ে থামলো শেষে' - সেই ম্যাট্রিক। হ্যাঁ, সে আমলে ম্যাট্রিক পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্বাবধানেই হতো। বাকি, সমস্ত প্রমান নিচের স্ক্রিনশটগুলিতে পেয়ে যাবেন। মনে রাখবেন জিন্না এবং গান্ধী, দুজনেই কিন্তু মাত্র তিনবছরে ব্যারিস্টার হয়েছিলেন, ফলে তাঁদের পক্ষে ইউনিভার্সিটির তিন বছরের ফুলটাইম ল ডিগ্রি এবং তারপর দুবছরের Inn, তারপর ন্যূনতম একবছরের Pupillage - মোট ছয় বছরের ধাক্কা খাওয়া সম্ভবই নয় - এবং সেটা যে তাঁরা করেননি, তা বলাই বাহুল্য।
No comments:
Post a Comment