পাকিস্তানের NSA ডঃ মঈদ ইউসুফের আজ আফগানিস্থান যাওয়ার কথা ছিল, যাত্রা পিছিয়ে গেছে। সরকারিভাবে জানানো হয়েছে যে কাবুলে আবহাওয়া খারাপ কিন্তু কাবুল এয়ারপোর্টে আমেরিকানরা একেবারে অত্যাধুনিক ILS লাগিয়ে গিয়েছিল, ফলে এই বাহানা ধোপে টেকে না, এটা নেহাতই মুখরক্ষার জন্য বলা হচ্ছে। আসল খবর ইরানের গোয়েন্দা সূত্র দিয়েছে।
বাইডেনসাহেব অবশেষে বুঝেছেন যে হটাৎ করে সরে গিয়ে তিনি চীন এবং রুশের জন্য ফাঁকা মাঠ উপহার দিয়ে দিয়েছেন এবং তারা নিজেদের মধ্যে পাস আদানপ্রদান করতে করতে দিব্যি ফাঁকা গোলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তালিবানকে চাপে রাখতে একদিকে রুশ আপাতত তালিবান বিরোধী পাঞ্জশের ঘাঁটির যোদ্ধাদের সৈনিক মদত দিচ্ছে, অন্যদিকে চীন পাকিস্তানকে commission agent বানিয়ে, ডুরান্ড লাইনের ঝামেলাকে backburner-এ রাখিয়ে, পয়সার বিনিময়ে আফগানিস্তানের লিথিয়াম মাইনগুলো হাতানোর ধান্দা করছে। এদিকে ইরান আবার তালিবান আর আহমেদ মাসুদদের মধ্যে একটা working relationship তৈরি করাবার চেষ্টা করছে আর গতবছর আগস্টের শেষে তেহেরানে দুইপক্ষের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনাও হয়েছে।
এই খেলায় সবকটা দেশের চাহিদা কিন্তু আলাদা আলাদা। ইরান চাইছে তালিবানের সাথে Northern Alliance-এর একটা সমঝোতা করিয়ে দিয়ে goodwill create করে যদি চাবাহার থেকে সেন্টাল এশিয়ার দেশগুলি অবধি অবাধ বাণিজ্য চালানো যায়, পাকিস্তান চাইছে চীনের সঙ্গে তালিবানের একটা বাণিজ্য চুক্তি করিয়ে দিয়ে চীনা ডলার পাইয়ে দেওয়ার বদলে যদি তালিবানকে দিয়ে ডুরান্ড লাইনের লড়াই postpone করানো যায়, রুশ চাইছে Northern Allienceকে তোল্লা দিয়ে আফগানিস্থানের ভেতরে হওয়া গরম করে তালিবানকে চীনের দিকে ঝুঁকিয়ে যদি ঋণদাতাকে মদত করা যায়, আর চীন চাইছে কিভাবে এর ওর তার ঘাড়ে বন্দুক রেখে নিজের কাজ সস্তায় হাসিল করা যায়।
মঈদ ইউসুফ চীনের দালালি করতেই আফগানিস্তান যাচ্ছিলেন, তাহলে হটাৎ আটকে গেলেন কেন? আসলে অকস্মাৎ ১৫ই জানুয়ারি ইমরান খান আর পুতিনের টেলিফোনালাপের পরেই রুশি বিদেশমন্ত্রক পাঞ্জশেরে তাদের কোনো interest নেই বলে বয়ান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকের মনে হয়েছিল খেলা ঘুরছে। আজ বোঝা গেল পর্দার পেছনে আসলে কি হচ্ছিল। তালিবানের বিস্তর টাকা চাই, আর এখন যে তাদের ডলার দেবে, তালিবান তারই গুণ গাইবে। ইরানি এজেন্সি বলছে আমেরিকা তলায় তলায় তালিবানকে টাকা দিতে রাজি হয়ে গেছে, কারণ ISIS, চীন আর রুশকে আটকাতে আফগানিস্তান আবার তাদের কাছে important হয়ে উঠছে। আজ তেহেরিক এ তালিবান এ পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী ইসলামাবাদে ঢুকে পুলিস মেরেছে, কাল যদি অন্য এক faction জিন জিয়াং-এ ঢুকে উগুরদের তাতাতে থাকে, আশ্চর্য্যের কিছু নেই।
দোহাতে বহুদিন ধরেই তালিবান আর আমেরিকার মধ্যে কথাবার্তা চলছে, সেটা গতবছর ১৫ই আগস্টের আগেও অনেকদিন ধরে চলেছিল। এই যে ভারত ইরানের মাধ্যমে কখনো আফগানিস্তানে ওষুধ পাঠাচ্ছে, কখনো গম, কখনো ভ্যাক্সিন, সেও আগের মতোই আমেরিকার দেখানো রাস্তাতেই হেঁটে। এখন, ইরান কেন ভারতকে সাহায্য করছে? আমেরিকা আর ইরানের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গিয়ে sanctions withdrawn হয়ে গেলে দুদেশের মধ্যে তেল ও অন্যান্য বাণিজ্য সহজতর হয়, সেই কথা মাথায় রেখে ভারত দুইদেশেরই বন্ধু হিসেবে এক unofficial মধ্যস্থতাকারীর সদর্থক ভূমিকা পালন করতে পারে, সেই আশায়।
দুনিয়ার অন্যপারে রুশ যতই ইউক্রেনকে ভয় দেখাক, পুতিনের সাধ্য নেই attack করার। করলে পুতিনের অবস্থা হিটলারের চেয়েও খারাপ হবে আর ইউরোপে যুদ্ধের সুযোগ নিয়ে চীন যদি তাইওয়ানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, বিশ্বযুদ্ধ এড়ানো অসম্ভব হয়ে পড়বে, সেটা পুতিন খুব ভালো করেই জানেন। এই বোকামি উনি করবেন না, যদিও আমেরিকা আর NATO-কে multifront war-এ ফাঁসিয়ে দেওয়ার আবহাওয়া সৃষ্টি করে উনি একদিকে চীনের ভূরাজনৈতিক সুবিধা করে দিচ্ছেন আর অন্যদিকে NATO-কে রুশের সীমানা থেকে কিছুটা দূরে রাখার দরও কষছেন। আর সেই সাথে যদি ফ্রান্সের সাথে Nord Steam 2 গ্যাস পাইপলাইনটা এই ধাক্কায় operationalise করিয়ে নেওয়া যায় তো সোনায় সোহাগা।
এতসবের মধ্যে ভারত কি করবে? ভারত wicket to wicket খেলবে, কোনো চৌকা ছক্কা হাঁকাবে না। ভারতের পাখির চোখ $৫ ট্রিলিয়ন economy; যা করার আমেরিকা করবে, ভারত কেবল নিজের আখের গোছাবে। সাউথ চায়না সি জুড়ে চীনের শত্রুদের ব্রাহ্মস আর অন্যান্য মিসাইল সিস্টেম বেচে মুনাফাও কামাবে আবার চীনের সাথে $১২৫ বিলিয়নের trade-ও করবে - আমরা বানিয়া, আপত্তি আছে?
No comments:
Post a Comment