আমরা এমনই - খুবই গোঁয়ার। গোঁড়া নই কিন্তু, গোঁয়ার, অর্থাৎ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আপনি ১৭ বার সোমনাথের মন্দির ভাঙ্গুন, আমরা ১৭ বারই নতুন করে তৈরি করবো। আমরা তো আর রোমান না, আমরা হিন্দু। তাই আমাদের মন্দির আমরা reclaim করি, ওখানে আবার নতুন করে মূর্তি স্থাপনা করি, এপেলো বা ভেনাস বা মিনার্ভাদের পূজা করা ছেড়ে দিয়ে তাঁদের মিউজিয়ামে showpiece করে দাঁড় করিয়ে রাখি না।
হিন্দু আর জাপানি শিন্তোরাই বোধহয় বিশ্বের দুটি মাত্র জীবন্ত মূর্তিউপাসক প্রাচীন সভ্যতা এবং সে জন্য আমরা ভীষণ গর্বিত। আমরা হিন্দুরা বিশ্বাস করি নুড়ি পাথর কাঠ কাটালি গাছ পালা ইঁদুর বাঁদর সব সেই একই ঈশ্বরের প্রতিরূপ, তাই তাঁরা সবাই শ্রদ্ধেয়, পূজ্য। আপনার সেই বৃহৎ দৃষ্টিভঙ্গি নেই, সেটা আপনার সমস্যা, আমাদের নয়।
আবার বলছি, অজস্র বিধ্বংসী আক্রমণের পরও আমরা যে এত হাজার হাজার বছর ধরে বহাল তবিয়তে টিকে আছি, তার কারণ জাতি হিসেবে আমরা ভয়ানক গোঁয়ার। আপনি আমার সঙ্গে যত ইচ্ছে তর্ক করুন আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই, কিন্তু যেই জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন সেটা আমি কিছুতেই মানবো না। আমি নিজে সেই বেড়া ভেঙে না ফেলতে পারলে আমার সন্তান সন্ততি কেউ না কেউ তা ভাঙবেই - সে আজ হোক বা পাঁচশ বছর পর - ভাঙবেই ভাঙবে।
এইভাবেই এমনই এক দিনে শ্রীরামজন্মভূমিকে ধ্বংস করে যে ধাঁচা মঙ্গোলরা গড়েছিল, তাকে করসেবকরা ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিলেন। সেই শৌর্যদিবসের পূণ্যদিনে মোঘলদের সঠিক নামে ডাকা শুরু হোক - মঙ্গোল। এই দানব আক্রমণকারীগুলো এসেছিল তুর্কমেনিস্থান-মঙ্গোলিয়া থেকে, ঠিক যেমন ইংরেজরা এসেছিল ইংল্যান্ড থেকে। দুটোই বিদেশি শক্তি, দুজনেরই উদ্দেশ্য এক ছিল - আমাদের গোলাম বানিয়ে আমাদের সম্পদ লুটে নেওয়া। খাঁড়ার ওপর বিষফোঁড়া, ওরা কেবল লুটেই সন্তুষ্ট ছিল না, আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে নষ্ট করার খেলাতেও মেতে উঠেছিল।
এই দস্যু মঙ্গোলগুলো আমাদের হাজার হাজার মন্দির ভেঙেছে, ভারতীয়দের জোর করে বা লোভ দেখিয়ে পন্থ পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে, এত অত্যাচার করেছে যে সারা উত্তরভারত জুড়ে মানুষ বাড়িতে ঠাকুরঘর তৈরি করে মন্দিরকে replace করতে বাধ্য হয়েছে, পূর্বভারতে দিনের আলোয় মেয়ের বিয়ে দেওয়াই অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।
যে সংস্কৃতিতে কন্যার সয়ম্বর হতো, সেই সমাজকে শিশুঅবস্থায় কন্যাকে গৌরীদান করতে এই লুটেররাই বাধ্য করেছে। ইংরেজও কিছু কম অত্যাচার করেনি, পাদ্রীদের মাধ্যমে ইংরিজি আর ভুলভাল ইতিহাস শিখিয়ে আর conversion করে করে আমাদের সমাজের ভিতকে নাড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের নিজস্বতা claim back করার সময় এসে গেছে। যে যা, তাকে সেই নামে ডাকা দিয়ে এই প্রক্রিয়া শুরু হোক। আর তার জন্য আজকের চেয়ে শুভ দিন আর কি হতে পারে?
No comments:
Post a Comment