ব্রহ্মসূত্রের ভাষ্যতে একজায়গায় শ্রীমৎ শঙ্করাচার্য্য স্বামী বলছেন,
पुरुषेण कर्तुमकर्तुमन्यथा वा कर्तुं शक्यम् , पुरुषतन्त्रत्वात् । ज्ञानं तु प्रमाणजन्यम् ।
(পুরুষেন কার্তুমকার্তুমন্যথা বা কার্তুম সক্ষম, পুরুষতন্ত্রতয়াৎ । জ্ঞানম তু প্রমানজন্যম ।)
মুখ্যত এই কথাই আচার্য্য বোঝাচ্ছেন যে যিনি কর্ম করছেন তাঁর বুদ্ধি, ইচ্ছা ও সক্ষমতার ওপর তাঁর কর্ম নির্ভরশীল। সেটা যে কোনো প্রমাণিত সত্যের উপর base করেই হতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, আবেগেরও ভূমিকা থাকতে পারে। জ্ঞান কিন্তু কেবলমাত্র প্রমাননির্ভর। এখানে অন্যতম মজার ব্যাপার হলো এই 'কার্তুমকার্তুমন্যথা বা কার্তুম' শব্দবন্ধটি - ভেঙে ভেঙে পড়লে 'কার্তুম অকার্তুম অন্যথা কার্তুম'। এই একটি শব্দবন্ধের মধ্যে যেন হিন্দু সভ্যতার উদারতার গোটা ভাবটি ধরা আছে। তোমাকে আমার কথা শুনেই চলতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। তুমি তোমার যে কোনো ধরণের কাজ, তা সে বস্তুগতই হোক বা উপাসনাগত, সেগুলো আমি যে ভাবে বলছি সেভাবে করতেও পারো, নাও করতে পারো অথবা অন্যভাবেও করতে পারো। এখানে আমি মানে বেদ। ধরো তোমায় কোথাও যেতে বলা হয়েছে। এখন, তুমি হেঁটে যাবে না ঘোড়ার পিঠে চড়ে যাবে না অন্য কোনোভাবে যাবে নাকি আদৌ যাবে না, সেটা সম্পূর্ণভাবে তোমার ব্যাপার - 'পুরুষতন্ত্র'।
কিন্তু জ্ঞানের বিষয়টি বাপু কেবলমাত্র প্রত্যক্ষ প্রমাণের ওপর নির্ভরশীল, ফলে ঐখানে শুধুই 'বস্তুতন্ত্র' - প্রমাণিত সত্য। Eternal Knowledge is an already existent thing, therefore does not offer options; ওটা পেতে গেলে ওই নির্দিষ্ট প্রমান ধরে ধরেই এগোতে হবে কারণ ওটি অপরিবর্তনীয়, নিত্য, সত্য - আগেও যেমনটি ছিল এখনো তেমনটিই আছে, ভবিষ্যতেও একইরকম অপরিবর্তিত থাকবে, ফলে ওতে নিজের জারিজুরি করার খুব একটা scope নেই। উদাহরণস্বরূপ, প্রত্যক্ষ প্রমাণের জন্য চোখ তখনই ব্যবহার করতে পারি যখন দৃষ্টির range-এর মধ্যে কোনো বস্তুর ওপর আলো পড়ে আর তার form বা রং দেখা যায়। যদি আলো না থাকে বা দৃষ্টির range-এর মধ্যে বস্তুটিই না থাকে, তাহলে দৃষ্টিসক্ষম হলে এবং চোখ ব্যবহার করার ইচ্ছে থাকলেও সেইসময় সেদুটির কোনো উপযোগিতা নেই, ফলে প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়ার ব্যাপারও নেই।
এবার তুমি আলো জ্বলার জন্য অপেক্ষা করবে না আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করবে নাকি 'ধুর, এখানে কিছুই দেখার নেই' বলে উল্টো দিকে হাঁটা দেবে, সেটা তোমার কর্ম। সেখানে যেমন কর্ম তেমন ফল। জ্ঞানের ফল কিন্তু অন্যরকম। জ্ঞান বস্তুতঃ বর্তমান এবং তাকে জানতে পারাই যথেষ্ট - it already exists and just knowing it is sufficient. No action is required thereafter to produce it; জ্ঞানের ফল জ্ঞানলাভের মধ্যেই নিহিত থাকে। অবশ্য এখানে পরাবিদ্যা অর্থাৎ পরমজ্ঞান আর অপরাবিদ্যা অর্থাৎ জাগতিক জ্ঞানের মধ্যে শঙ্করাচার্য্য যে পরমজ্ঞানের কথাই আলোচনা করছেন, সেটা নিশ্চয় বলার অপেক্ষা রাখে না।
No comments:
Post a Comment